ঢাবির সার্টিফিকেট উত্তোলন পদ্ধতি
বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে অনার্স এবং মাস্টার্স এর রেজাল্ট বের হচ্ছে। রেজাল্ট বের হবার সাথে সাথে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলা, তা হল সার্টিফিকেট তোলা। এর জন্য রেজিস্টার বিল্ডিং ঘুরে ঘুরে হয়রান হতে হয় অনেককেই। অনেকেই বিষয়টা নিয়ে কনফিউজড। তাই এখানে পুরো প্রক্রিয়াটা বলে দিচ্ছি। প্রস্তুতি নিয়ে গেলে বারবার ঘুরাঘুরি করতে হবে না।
সার্টিফিকেট উঠানোর জন্য দরকারী ডকুমেন্ট:
১. একদম শেষ যে পরীক্ষাটা দিয়েছেন, তার প্রবেশপত্র।
অনার্সের ক্ষেত্রে- ৮ম সিমেস্টার/ফোর্থ ইয়ার ফাইনালের প্রবেশপত্র। (না থাকলে ফাইনাল ইয়ারে ভর্তির পে-ইন স্লিপ, যাকে আপনারা Pain Slip বলেন আরকি)
মাস্টার্সের ক্ষেত্রে- সেকেন্ড সেমিস্টার/ ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার প্রবেশপত্র। (না থাকলে মাস্টার্সে ভর্তির পে-ইন স্লিপ)
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র।
৩. লাইব্রেরি কার্ড (যদি করিয়ে থাকেন/হল থেকে দিয়ে থাকে)
উত্তোলন প্রক্রিয়া
১. ফর্ম সংগ্রহ:
কোন একটা শুভদিন দেখে সারাদিন সময় হাতে নিয়ে সকাল সকাল চলে যাবেন রেজিস্টার বিল্ডিং এর ৩১০ নম্বর রুমে। সেখান থেকে ১৫/- টাকা দিয়ে ফর্ম কিনবেন। (অনার্স এবং মাস্টার্স এর সার্টিফিকেট একসাথে উঠালে দুটো আলাদা ফর্ম কিনবেন।)
২. ফর্ম ফিল-আপ:
ঠান্ডা মাথায় সবগুলো তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ফর্মে একটা বক্স আছে ‘মাস্টার্স ডিগ্রী শেষ পর্ব পরীক্ষার্থীর ষ্কেত্রে…’ এমন কিছু লেখা। অনার্সের রেজাল্ট আসতে আসতে অনেক দিপার্টমেন্টের মাস্টার্স এর ফার্স্ট সেমিস্টার পরীক্ষা হয়ে যায়। সেসময় অনার্সের সার্টিফিকেট তোলার ক্ষেত্রে মাস্টার্স ফার্স্ট সেমিস্টার পরীক্ষা যদি হয়ে থাকে কেবলমাত্র সেক্ষেত্রেই এই বক্সটির যাবতীয় তথ্য পূরণ করবেন। নাহলে ফাঁকা রেখে দেবেন।
যারা শুধু মাস্টার্স কিংবা অনার্স এবং মাস্টার্স এর সার্টিফিকেট একসাথে তুলবেন, তারা এই বক্সটা ফাঁকা রেখে দেবেন।
ফর্মের নিচে ছবির বক্সে এক কপি রিসেন্ট পাসপোর্ট সাইজের ছবি গাম দিয়ে পেস্ট করবেন। উল্লেখ্য যে, এখানে কোন ডকুমেন্টই সত্যায়নের কোন ঝামেলা নেই কেননা আপনার হল প্রভোস্টের সিগনেচারই সত্যায়নের কাজ করবে।
৩. হল থেকে স্লিপ নেয়া:
সব তথ্য পূরণ করা হয়ে গেলে ফর্মটি নিয়ে চলে যাবেন হল অফিসে। হলের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করার জন্য হল থেকে একটা স্লিপ দেবে। সেটা নিয়ে ব্যাংকে যেতে হবে। (এখনই ব্যাংকে দৌড় দেবেন না, তার আগে কিছু কাজ আছে।)
৪. হলের সিট কাটানো:
এই ধাপটা শুধুমাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আপনি হলে আবাসিক হয়ে থাকলে আপনার ফর্মের পেছনে একটা সিল দেয়া হবে। তাতে ‘সিট প্রদানের তারিখ’ (অনার্স এবং মাস্টার্স উভয় ক্ষেত্রে) এবং ‘সিট বাতিলের তারিখ’ (মাস্টার্সের ক্ষেত্রে) লিখে দেবে হল থেকে। সিলটা দেয়া হল কিনা খেয়াল করবেন। এবার ফর্ম এবং হল থেকে দেয়া স্লিপটা নিয়ে চলে যাবেন রেজিস্টার বিল্ডিং এর ১২৪ নম্বর রুমে। সেখান থেকে আপনার ফর্মে সিল মেরে এই মর্মে সিগনেচার করে দেয়া হবে যে ‘বকেয়া পাওনা পরিশোধিত।’
৫. সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর ক্লিয়ারেন্স:
এবারে যাবেন সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর পেছনে যেখানে পুরনো পত্রিকার সংগ্রহশালা, সেখানে। ঠিক সেখানে না, তার আগেই দেখবেন গ্রিল দেয়া একটা কাউন্টারে একজন বুড়ো চাচা বসে থাকেন। তার কাছে ফর্মটা দেবেন। লাইব্রেরী থেকে কোন বই নিয়ে থাকলে সেটা জমা দেবেন। মাস্টার্স এর ক্ষেত্রে লাইব্রেরী কার্ড (করিয়ে থাকলে/হল থেকে দিয়ে থাকলে) তার কাছে জমা দেবেন। তাহলে তিনি আপনার ফর্মে এই মর্মে সিল মেরে দেবেন যে ‘কোন বই পাওনা নাই।’ এবার সেন্ট্রাল লাইব্রেরির মূল গেটে ঢুকে ইনফরমেশন বুথ থেকে ঐ সিলের ওপর একটা সিগনেচার করিয়ে নেবেন।